Posts

Showing posts from 2021

তুমি অপরাধী অথবা উন্মাদ

মোহাজির হুসেইন চৌধুরী ত্রিভুবন বলতে যে অক্ষরেখা দ্রাঘিমা ভেসে ওঠে মনের পুঞ্জিতে ভোরের আলো এসে তাকে ধুয়ে মুছে নেয় দিগন্তে হাহাকার জাগে নৈরাশ্যিক ছোঁবলে তবু আমি বেঁচে থাকি স্বপ্নিল বঙ্কিম পথ নিয়ে যে আকাশে কোন ধ্রুবতারা নেই আমি নিজেকে মনেকরি নিজের ধ্রুবতারা নৈসর্গিক আলো হাওয়া তপ্ত কুয়াশায় ঘেরা চারদিকে জলতরঙ্গ বাজে টপ  টপ টুং টাং এক উদাসী ভিখারিনী ছেঁড়া কাপড়ের আঁচলে লুকিয়ে রাখে সোমত্ত সংসার তোমার আমার এবং একাধিকবার উদলা হয়ে গেলে হাওয়ারা খিলখিল হাসে আকাশ ভোগ করে যৌবন উল্লাস। খুঁজে ফেরে  উত্তরাধিকার। এ লজ্জা কারো কাছে বলতে নেই নাহলে তুমি অপরাধী অথবা উন্মাদ।

অঝোর লবণজল দু' দানা ভাত।।

সীমিত শব্দের অক্ষরে ঘুরপাক 'অঝোর লবণজল আর দু' দানা ভাত' ; এটাই কি জীবন? হাত থেকে হাত ঝেড়ে ফেলে দূরান্তর মন ও মননের অনিকেত আশার ব্যঞ্জনা ছা-বাচ্চার প্রতিকৃতি বুকে নিয়ে শুধু পথ হাঁটা.... ক্যানভাসে নতুন তুলির স্পর্শ বারবার নতুন করে মুখ আঁকা কিছু প্রতিধ্বনি বারবার ফিরে আসে পথিকের ক্লান্ত পায়ে অনৈচ্ছিক আঘাত হানে আবার জীবন খুঁজে জীবনের বাঁকে। একটা ছোট্ট  নদী লবণাক্ত জল সেই শব্দ অনর্গল করাঘাত করে -অঝোর লবণজল আর দু' দানা ভাত ;এটাই কি জীবন? স্বচ্ছন্দের হাসি দুটো ঠোঁটে ব্যর্থতার রঙ মুছে দিতে বারবার প্রলেপন  পলেস্তারা খসে পড়া খসখসে গালে মাঝেমাঝে ভাঙা দাঁত বের হয়ে কারুশিল্পে ব্যাঘাত ঘটায় আর একটু পথ হাঁটি আর একটু......... দেখা যাক বদলে কি না শব্দের বন্ধনী -' অঝোর লবণ জল আর দু' দানা ভাত..... '

নক্ষত্র নাগরিক।।

মোহাজির হুসেইন চৌধুরী।। আমাকে তো যেতে হবে যেতে হবে আকাশের অলিগলি পেরিয়ে দুর্দম দূরত্ব পাড়ি দিয়ে এক অজানার সমুদ্র বক্ষে আমি নক্ষত্র-নাগরিক হব একদিন রকেটের খোলসের মতো পরিত্যক্ত শেলগুলো একে একে খুলে ফেলে দাগ রেখে পথে তোমাদের সজল চোখে ধূলো দেব- শূন্যের অবয়বে যে দিল গড়ন সেই চাঁদ সেই  সূর্য সেই  বাতাসের স্পর্শ মাখা অণু পরমাণু  থেকে  আমার অদ্ভুত সৃজন  কারও অভিসার কারও ঈপ্সিত ইঙ্গিতে  এই বিচরণ ক্রমশ স্তব্ধতার দিকে হেঁটে যাচ্ছি বিকিরণ বিচ্যুতি স্বতঃসিদ্ধ কক্ষপথ সোহাগের বুলি দিয়ে তার কাছে ডাকে আমি যাবো এভাবেই একদিন তোমাদের অফুরন্ত ভালবাসা নিয়ে চলে যাবো নক্ষত্রের দেশে স্তব্ধবাক এই যাত্রা আর ফিরে আসা নেই নিরুত্তর তমালের ছায়া মাখা যাত্রাপথে অন্তর্গত স্রোতে একদিন বিলীন হব একা-একা নিঃশব্দ অক্ষরে।

সুখ পাখির বাসার খোঁজে।।

মোহাজির হুসেইন চৌধুরী।। তাকে দেখেছি দূর থেকে সলাজ অবয়বে মুখে অবগুণ্ঠন আরও বেশি টেনে শরীরের আধা অংশ ঢেকে দিয়েছিল আমি একনয়নে চেয়ে রয়েছিলাম তার দিকে ধীরেধীরে ভদ্র হাওয়া আর কাচুমাচু মেঘ আমাকে ঘিরে ধরল একটা অবরোধ অন্যরকম পাহাড়ি পাইনের সারি বদ্ধ প্যারেডের তালে একটা  রাজহংস  ডানা ঝাড়তে ঝাড়তে উৎকন্ঠ গ্রীব চমকে ওঠেছিল আমাদের ভালবাসাবাসি দেখে সুখের মোহাচ্ছন্ন চোখ কিংবা হৃদয় বাতাসের তরঙায়িত হাহাকার শুনেছে সারাজীবন একটু সুখের খোঁজে... 

ব্ল্যাকহোল বন্ধু।।

মোহাজির হুসেইন চৌধুরী।। একটা ব্ল্যাকহোল আমার বন্ধু ইতস্তত ছড়ানো ছিটানো টেনশনগুলোকে হা করে গিলে খেতে মাঝেমাঝে নেমে আসে ধরণীর কাছাকাছি।  আমি মরি বা বাঁচি সে তো আয়ুর খেলা সে আমায় সঙ্গ দিয়ে সব অবাঞ্চিত তার মহাগহ্বরে টেনে নিয়ে যায় তবু ক্ষুধায় কাতর আরও নিতে চায় আরও... আমি দেই তাকে যতটা আমার নেই তার চেয়ে বেশি  উৎকন্ঠা -উদ্ভট ভাবনা... তবে সচেতন করে দিয়ে গেছে বন্ধু তার ক্ষুধার খোরাক জোগাতে না পারলে আমাকেও টেনে নেবে একদিন... শুধু এই টেনশনে এখন আমি বেঁচে আছি জানিনা এ বন্ধুত্ব বাকি থাকবে কতদিন হয়তো  এ আমার কোন আপন জন অন্য রূপে অন্য পরিচয়ে...

শব্দের অক্ষরে জীবন।।

মোহাজির হুসেইন চৌধুরী।। শব্দের অক্ষর আর অক্ষরের ঝংকার এই নিয়ে সেজে ওঠে যা-- তা কবিতা নয় একটা জীবন প্রতিক্ষণ নির্দ্বিধায় পার হয়ে যায় সেতু একটা অন্যরকম... কখনও ঢোল পেটানো আওয়াজ কখনও নীরব লজ্জাবতী অথবা শেকড়বিহীন  ঝুলন্ত স্বর্ণলতা শব্দের দ্যোতক ধ্বনি তার মাঝে তুমি আমি লটকে থাকি ঘুড়ির মাঞ্জা দেয়া সূতোর মতো শব্দ না হলে জীবন কোথায় চাঁদের অক্ষর একলা রাত পোহায় নির্লিপ্ত নিরীক্ষণে দেখা যায় মূল ওষুধের চেয়ে  প্লাসিবো বা ফাইটমে দ্রুত অসুখ সেরে যায় স্যামুয়েল হ্যানিমেনের আশ্চর্য ভোজবাজি.... এসব জেনেও রাতের গভীরে দুচোখের মণি দিয়ে সাজাই অক্ষর এ আমার সান্ত্বনা এ আমার নেশাময় খেলা এভাবেই একটা জীবন চলে যায় সচল থেকে অচলের দিকে...