Posts

পোড়া অক্ষরে কবিতা।।

  পোড়া অক্ষরে কবিতা লিখছি  দিগদিগন্তে ছড়িয়ে পড়ছে গন্ধের কুয়াশা  আশ্বিনের ঢেউ খেলানো ধানের ডগা মাথা উঁচু করে জানিয়ে যাচ্ছে ভালবাসা  পথচারী মাথা নিচু করে হেঁটে যায় আলপথে নিশুন দুপুর বেলায়  কাপড়ে লেগে আছে কাদামাটির দাগ যেন দু'হাতে জড়িয়ে ধরে জানাচ্ছে  শুভেচ্ছা সলাগ  ওদের ছোঁয়ায় কবিতা হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত  কিশোরী বালিকা মেলে ধরে আদিম স্পর্শ  কিছু স্বপ্নের মালা গেঁথে নিয়ে আসে বীথিকা জুঁই  কবিতা জেগে ওঠে সেজে ওঠে মরমি ভূঁই। 

জীবন - ১

প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত  জীবনকে দেখেছি দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় বারবার উল্টে নিয়ে পড়তে হয়  তারপর বাকিটুকু অপর পৃষ্ঠায়.... পৃষ্ঠা উল্টাতে গিয়ে ধরা পড়ে  উইপোকা খেয়ে নিয়েছে অক্ষরগুলো  এখন সব গুমনামে অতীত  ছেঁড়া বস্ত্রে রাস্তায় শুয়ে থাকা রমণী  হারানো ঠিকানায় নিজেকে খুঁজতে গিয়ে  পুরুষের হাজার ধমক গলায় সুশোভিত অলংকার  তবু হাতড়াতে থাকি এখানে ওখানে  ফেলে আসা পথের আনাচে কানাচে  আমার কন্ঠহারের ফেলে যাওয়া গুটি  অনর্গল পাতার পর পাতা উল্টে যাই আলোটা যতক্ষণ নিভে না যায়  অপর পৃষ্ঠায় অপলক সন্ধানী চোখ। 

সেই মুখ সেই মেয়ে।।

সেই মুখ সেই মেয়ে।।   আকাশ কী জেনেছিল তাকে কতটুকু ভালবাসি তাকে নিয়ে এযাবৎ কতটা কবিতা লিখেছি  সেই মুখ সেই মেয়ে যারা রোজ আসে আমার কবিতায়  গভীর রাতের আঁধারে একা বসে বসে  শব্দ আওড়ায় আমি খেলা করি নি:সঙ্গ নির্জনতার বুকে  তারা কী কোনদিন দেখেছিল উদগ্রীব চোখে  তাদের শরীরের একএকটা অঙ্গ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম সারারাত  একটা সুশৃঙ্খল জীবনকে বিনষ্ট করে খুঁজেছি কবিতার সূত্রপাত  নেমেছে আপন হতে গঞ্জনার পাহাড়  অসময়ে শরীর ব্যাথা ক্ষয়িত হাড় দুর্ভোগের কণ্টকিত মালা জড়ায়েছি গলে জীবনের মূহুর্তগুলোকে চর্বিত ঘাসের মতো দলে  নিষ্ক্রমণ করেছি এক একটা অক্ষর  ওরা জানলো না জানতে পারল না উদাস নেত্রের এক আশিক দেওয়ানা  তার সমস্ত বৈভব অকাতরে বন্ধক রেখে  পুড়েছে ধূপের মতো  তার সকল শংকা তার সমস্ত ভয় একপাশে ঠেলে রেখে অকুতোভয়  চরম সংকল্প নিয়ে হেঁটে গেছে বিপদসংকুল কত রাত কতটা আঁধার কত প্রতিকূল এক একটা তারার চোখ ঝরায়েছে অশ্রুর সাঁতার  প্রতিবিম্বে  ফুটে ওঠে অনিশ্চয়তা কাতারে কাতার তবুও দাঁড়িয়ে রয়েছি সাধনায় তুলে আনতে পবিত্র অমৃত  যাদেরকে নিয়ে সা...

একটা ছাদ আর একটা আকাশ

ছিলোনা কিছুই না ছাদ না আকাশ  শুধু অরিন্দম শব্দগুচ্ছ আর বায়বীয় আশ্বাস  এলো প্রেম এলো ছন্দ পাহাড়িয়া ভুঁই জুড়ে  কুকীর্তির শ্বেতপত্রে আঁকা হল সৃষ্টির প্রতিভাসে বনমল্লিকার হাতের বেহালা সুর তুলে অনভ্যাসে বৃষ্টি তার দৃষ্টি মেলে এঁকে দেয় ছুঁ মন্তর তখনই দাঁড়ায় এসে একটা ছাদ অনন্তর  ছাদের উপর দাঁড়িয়ে কিছু দীর্ঘ শ্বাস  হাত বাড়াতেই নেমে এল একটা  আকাশ  অফুরন্ত ভালবাসা অথবা অনৈচ্ছিক প্রেম স্রষ্টার কীর্তিযশ এভাবেই অনন্ত অসীম  তার মুষ্ঠির ভেতরে বন্দি কাল ও যাপন  শূন্য থেকে শুরু ফের শূন্যের অনুরণন।   

বুকের ভেতর গোলাবারুদ

বুকের ভেতর গোলাবারুদ পুরে রাখি মুখের ঠোঁটে ভালবাসার চড়ুই পাখি  সন্ধ্যা সাঁজে জ্বালিয়ে রাখি ধূপের বাতি নয়নজলে সিক্ত চোখে ধ্যান আরতি  হায়রে আমার অবোধ শিশু পরমেশ্বর  তোমায় ভাবি খেলা ঘরের পুতুল সম কানামাছি খেলার ছলে ধমধমাধম ঠকাই শুধু ক্রীড়াঙ্গনে হাজার বছর  মানুষ খুঁজি একটা মানুষ জগৎ জুড়ে   নকল সোনায় সুনিপুণা আদল গড়ে  যাকে দেখি তার ভেতরে গোলাবারুদ  আগুন শুধু আগুন ভরা তালেমামুদ অবশেষে নিজের দিকে তাকাই যখন  আশীবিষের আশিমণ অন্তর্দহন টের পাওয়া যায় বুকের ভেতর  মানুষ হওয়ার কল্পনাটাই দূর অন্তর 

কিরণের ছয়লাপ রেখে যাব

অনিশ্চিত জীবনের কাছে কি রেখে যাব কিছু শব্দ কিছু অক্ষর অথবা চিরন্তন ছাপ প্রজন্মাবধি বিকরিত কিরণের ছয়লাপ  যা আরেকটা নতুন জীবনে এনে দেয় সূত্রপাত  আমাকে ভেবে নিতে হবে এ চলার পথে  আমি শুধু আমার জন্যে আসিনি পৃথিবীতে  কাঙাল হাত নিয়ে অন্যের আনন্দ সুখ হাতড়িয়ে নিতে।  যত পারি বিলাতে বিলাতে যাব স্বাচ্ছন্দ্যের অমৃত ফল। আমি কাঁটা নয় ফুল হয়ে সবার অন্তরে ফুটে থাকতে চাই ভালবাসা বিলিয়ে যাব সারা যাত্রাপথে  ফেরাপথে আমার নেওয়ার কিছু নেই। 

শহীদের নি:শব্দ অক্ষর

শহীদের নি:শব্দ অক্ষরে লেখা হল যে ইতিহাস  ম্লান করতে পারেনা তারে  কোন যুগ কোন প্রযুক্তির ছাপ মেদিনীর বুক চিরে সমস্ত খননের পর ভেসে ওঠে সেই নাম সেই অনন্ত অক্ষর  এক নয় দুই নয় বারবার শতবার  বুকের স্পন্দনে ভেসে ওঠে ছবি তার  উনিশের ধ্বস্ত বুক কেঁপে ওঠে থরথর  পলাশের রঙ মেখে বাঙালির অন্তর  একাদশ শহীদের স্মরণে জেগে ওঠে  উনিশ এলেই তাই বাঙালির হৃদয় জুড়ে  এক অনাবিল অনুভূতির ফুল ফোটে।