Posts

রক্তাক্ত ঈদের চাঁদ

ঈদের রক্তাক্ত হেলাল      মোহাজির হুসেইন চৌধুরী  তুমি খুঁজছো খুশির চোখে ঈদের হেলাল আমি দেখছি আকাশ ভরা  টইটম্বুর লালে লাল উঠেছে ঈদের চাঁদ    চাঁদ নয় শিকারীর ফাঁদ মাসুম শিশুর খুনে রঞ্জিত সভ্যতার মিনার  কলংকের বিপরীতে অলংকৃত কী বিপুল সমাহার  কোথা ঈদ আমি যাই ঈদগার মাঠে বুকে বাঁধা কালো ব্যাজ টলটল  চোখে জল ফোটে  বুকের ভেতরে এক জ্বলন্ত অঙ্গার  মানুষের পৃথিবীতে এ কী সনসার ইনসাফ জেগে ওঠবে কবে আর কেউ কি বলার নেই -'থামো  কি হচ্ছে এসব?  সব মাঠে নামো' নরসংহারের ধারাসার বন্ধ হোক খুশির বার্তা নিয়ে শাওয়ালের চাঁদ উঠুক ইবলিসের  উড়ন্ত পতাকা ভেঙে পড়ুক  রক্তাক্ত চাঁদ দেখিতে চাইনা আর ঈদ তুমি এসো মানবতার বার্তা নিয়ে  ফিরে এসো বারবার। 

হ্যালুসিনেশন।।

তোমার হ্যাঁ তে হ্যাঁ তোমার না তে না তোমার কথাই আমার কথা হয়না অন্যথা   মন মগুজে একই বার্তা তোমার মনের মর্জি  আমার সকল ইচ্ছেগুলো সেলাই করে দর্জি  এক সূতোতে গেঁথে দিল বিবেক বোধের মালা  ভাটির স্রোতে ভাসতে থাকি চালকবিহীন ভেলা গচ্ছায় যাক শরীর কিংবা আস্ত আমার দেশ যাদুকরের হ্যালুসিনেশন ঘুরায় ছড়ি বেশ।  রাজার হাতে ঘুড়ির লাটাই সূতোয় ঝুলে ঘুরে  অঙ্গচ্ছেদেও বলবেনা কথা যাকনা শরীর পুড়ে  চোখ খুলে দাও বুক খুলে দাও প্রয়োজনে মুখ হ্যালুসিনেশন!  হ্যালুসিনেশন!  দেশ ভরা উজবুক।  রাজার কথাই অমর বাণী যুক্তি তর্ক বৃথা  সবার উপর রাজাই সত্য হবেনা অন্যতা সময় হাসছে সময় কাঁদছে যাপন কথার ফাঁকে  চোখের অশ্রু মুছবে কখন কেউ বলোনা কাকে। 

একটা বালুর দেশে

একটা বালুর দেশে  একটা বালুর দেশে বেশ ভাল আছি  কড়া রোদ্দুরে অজানা দূরত্বে  বড় বড় জলাশয় ভাসে  তৃষিত জিহ্বারা উদগ্রীব হয়ে চেয়ে থাকে  করুণার বৃষ্টি তবু নামে না এদেশে।  এখানের প্রেম ভালবাসা  ফুটন্ত জলের মতো টগবগ করে  ইচ্ছেরা বখাটে ছেলের মতো দিশাহীন ঘুরে  দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ পার হতে গেলে  পা পিছলে পেছন ছুটে সময়ের পাখা ধরে  রাতের আঁধারে নামে কুয়াশার ঝড় লু হাওয়ায় ঝলসে যায় সারাটা দুপুর  মাঝে মাঝে মরুদ্যান খাজুরের পাতা  সীমিত সাশ্রয় দেয় গোঁজে রাখি মাথা এখানে সুখে থাকে উটের সংসার  কাঁটা গাছে মুখ রেখে আহা কী বাহার  রক্তাপ্লুত মুখ নিয়ে দিব্যি অনন্ত সুখ  জীবন কাটিয়ে যাই এক সংসার বিমুখ 

একটা লোমশ কবিতা ভালবাসার বেঁচে আছে বছর থেকে বেশি দিন /আমি পথ চেয়ে আছি লবণাক্ত সমুদ্র নিয়ে /তুমি মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আয়নায় /নিজেকে সাজাতে ব্যস্ত প্রথম প্রেমের চিঠি / পাঠক নিমগ্ন সারৎসার উদ্ধারে ডুবে আছে অথৈ জলে /লোমশ কবিতা সেজে আছে আবছা অক্ষরে / যেন বোরখার আড়ালে এক রহস্যময় নারী।

যা কিছু লিখি

যা কিছু লিখি তোমার জন্য লিখি যা কিছু লিখি মৃত্যুর পরওয়ানা  জীবনের প্রেমপত্র হারিয়ে গেছে কৈশোরের আগেই  স্মৃতিতে উদ্ভাসিত শৈশব আর যৌবনের কাটাগাছ বার্ধক্যের এই মুহূর্তে সুহেলী সুহৃদের মতো  বিঁধতে থাকে হৃদয়ের অলিতে-গলিতে  সুখের নামেতে দুখের অনন্ত দহন তোষের আগুনের মতো আমার নিত্য সহচর  মানিয়ে নিয়েছি জীবনের পলে পলে এখন এসময় শরীরে হেলান দিয়ে বসে থাকতে হয় আমি তার নই সেও আমার নয় একদার জ্বলন্ত চোখ আজ নিভু নিভু  পড়ন্ত বেলার আলো মুখে পড়ে মশকরা করে তার চাহনিতে নতুন সরণীর ইঙ্গিত  আমাকে বিচলিত করে  ফিরে দেখি আমার কৈশোর আমার যৌবনের কারুকাজগুলো উজ্বল হয়ে ভাসছে। 

তোমারই বিজয় হোক।।

আবু সায়ীদ! আবু সায়ীদ!  কার সামনে এ বুক পেতে দিলে  তারা কি জানে এ বুকের ভেতর একটা আকাশ  মুক্তির গনগনে আঁচে জ্বলছিল তারা কি জানে এ বুকের প্রতিটি হৃদস্পন্দনে একটা দেশের মানুষের গণ দাবি লিখা ছিল । লিখা ছিল একটা স্বৈরাচারী সরকারের  উন্মাদনার প্রতিবাদ । তোমার বুকের মূল্য কী বুঝবে তাগুতের সন্তান ওরা গদি চায় মোহমন্ত্রে ঢেকে রাখে নৃশংস মুখ ভোটের হিসাব কষে ' কোটার' স্বেচ্ছাচারী ওরা জানেনা এ দেশে তোমার মত হাজারও যুবক জানকে বাজি রেখে গুলির মুখে বলে ওঠতে পারে তোমাদের অন্যায়কে বরদাস্ত করতে পারি না হঠকারিতার জবাবে আমাদের রক্ত নিয়ে আর খেলা করোনা ফিরিয়ে দাও অধিকার এ দেশ আমার  দেশকে রক্ষা করা আমাদের দায়ভার। আবু সায়ীদ! আবু সায়ীদ! তুমি যুবাদের মুক্তির মশাল আত্ম ত্যাগের মন্ত্র ফিরে এসো বারবার কালের রাখাল তাগুতের সংহারক।  সব দেশে সব কালে তোমারই বিজয় হোক।

উনিশের ভালবাসা

একটা উনিশ বুকের ভেতর আপন হারার যন্ত্রণা একটা উনিশ জাগিয়ে তোলে সংঘবদ্ধ মন্ত্রণা একটা উনিশ উদাস নয়ন খুঁজছে মনের ভাষা পলাশ ফুলের রঙ ঝরছে দারুন ভালবাসা একটা উনিশ কাঁপায় ভূমি শহিদ একাদশ একষটটির সে রণাঙ্গনে মানেনি আপোস বরাক জুড়ে আওয়াজ ওঠে বাংলা আমার মা রক্ত দেবো পরাণ দেবো জবান দেবোনা একটা উনিশ শুধুই জানে গান্ধীবাগের ভাষণ বছর পরে উর্দি পরে করে শহিদ স্মরণ একটা উনিশ চিরদিন আমার আত্ম পরিচয় একটা উনিশ গুছিয়ে দিলো আমার সকল ভয় উনিশ আমার বুকের গরব উনিশ চির অম্লান উনিশ আমার বুকে গাঁথা আজনমের গান বিশ্ব জুড়ে আওয়াজ ওঠে বাংলা ভাষার জয় বাঙালিরা সগৌরবে আজ বাংলায় কথা কয়